১০ টিপস জীবনে সফল হওয়ার, বোর্ড পরীক্ষার আগে মনের জোর বাড়ানোর সহজ উপায়
ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2024)। সামনেই দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা (HS Exam)। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলিতে দশম শ্রেণী ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা শুরু হবে খুব শীঘ্রই। সব দিক দেখলে সময়টা একটি পরীক্ষার বাতাবরণ তৈরি করেছে। পরীক্ষা মানেই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একটু টেনশন এবং উত্তেজনা কাজ করে। বর্তমানে শীতের আমেজ শেষে বসন্তের কোকিল ডেকে উঠলেও পরীক্ষার্থী ও তার অভিভাবকদের কানে একটাই কথা বারবার বেজে উঠছে, সেটি হল- পরীক্ষা আসন্ন। তবে এই সময় মনের জোর আরও দৃহ করা দরকার।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বোর্ড পরীক্ষায় (Board Exam) একমাত্র কথা নয়। পরীক্ষার সময় যেমন সেই নিয়ে দুর্বলতা দূর করা উচিত, তেমনি ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য কি হবে সেটা নিয়েও একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হওয়া দরকার। তাহলে পড়াশোনায়ও মন বসবে আর পরীক্ষা নিয়েও অকারণ ভয় থাকবে না। তবে এ কথা অবশ্যই স্মরণে রাখা উচিত যে অন্যান্য শ্রেণীর পরীক্ষার মতোই বোর্ড পরীক্ষা তার থেকে ভিন্ন কিছু নয়। অতিরিক্ত কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না। কেবলমাত্র নিয়ম মত পড়াশোনা করা এবং কিছু সহজ উপায় মেনে চললেই পরীক্ষায় ভালো সাফল্য সম্ভব।
কী কী করা জরুরি?
১. পরীক্ষার দিনের আগের রাতে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। রাত জেগে পড়া বা খুব ভোর ভোর উঠে পড়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। পরীক্ষার পূর্বের রাতে বেশি পড়ার চাপ না নেওয়ায় উচিত।
২. পরীক্ষার দিন একটু সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা ভালো। সেজন্য রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে এবং সকালে উঠলে দিনটা বেশ ভালো লাগবে। এমন অভ্যাসই তৈরি করা ভালো।
৩. ভবিষ্যতে পড়ুয়া কি করতে চায় বা তার লক্ষ্য কি? সেটা যদি নির্ধারণ করতে পারে তবে সে জীবনে সফল হতে পারবে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে, পুরো দিন আপনি কিভাবে কাটাতে চান তা মনে মনে ভেবে ফেলুন। কোন কাজটা করলে আপনি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন সেটা ভেবে নিন।
৪. সারাদিন ভাল কাটাতে এবং এনার্জি লেভেল (Energy Level) বৃদ্ধি করতে সকালে ঠিকঠাক ভাবে খাওয়া উচিত। প্রাতরাস ঠিকঠাক হলে সারাদিন পড়াশুনা বা অন্য কাজে এনার্জি বজায় থাকবে।
৫. সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে, একটু-আকটু ব্যায়াম করা ভালো। পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে একটু হেঁটে আসা বা স্ট্রেচিং করা বেশ উপযোগী। এতে রিলিফ ফিল হয় এবং পড়াশোনায় মন লাগে।
৬. এই সময়ে বাড়ির খাবার খাওয়াই শ্রেয়। বর্তমান সময়ের ছেলে মেয়েরা বিঞ্জ ইটিংয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। পরীক্ষার টেনশন হলে অনেকটা জাঙ্ক ফুড স্ট্রেস কমাতে চায়। কিন্তু এগুলির ফলে বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। ট্রান্স ফ্যাট অবসাদ ও আলস্য বৃদ্ধি করে। স্বাস্থ্যকর খাবার, বাড়িতে প্রস্তুত হাল্কা খাবার খেলে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকে।
৭. নিজেকে সুস্থ ও সবল রাখতে রাতে ভালো ঘুম হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বেশি রাত না জাগাই ভালো। ল্যাপটপ বা মোবাইলে সময় নষ্ট না করা উচিত। টেনশন বা স্ট্রেস কমাতে টিভি দেখুন অথবা বই পড়ুন কিংবা ছবি আঁকতে পারেন। এতে আপনার বুদ্ধির তীক্ষ্ণ হবে।
৮. কথায় রয়েছে কথা কম কাজ বেশি। সফল ব্যক্তিরা কম কথা বলার চেষ্টা করেন। তাই চুপচাপ থাকলে মনসংযোগ এবং কাজের মান দুটোই বৃদ্ধি পায়।
৯. সব সময় নিজের লক্ষ্য স্থির রাখুন। কে কতটা পড়ছে? কার প্রিপারেশন কেমন? কে কি করছে? সেসব না দেখে নিজের একটি আলাদা ফিক্স রুটিন তৈরি করুন। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এমন একাধিক পড়ুয়া আছে যারা পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিয়েও শুধুমাত্র ভয় বা অন্যকে দেখে আতঙ্কের কারণে খারাপ পরীক্ষা দিয়ে ফেলে। তাই পরীক্ষার সময় সর্বদা কারোর কথা না ভেবে হয়ে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকা উচিত।
১০. থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার কালজয়ী উক্তি ‘কাবিল বননে কি কোশিস করো, কামিয়াবি খুদবো-খুদ আ জায়েগি।’ কেবলমাত্র নাম্বার এবং প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবলে মনের ওপর একটা চাপ সৃষ্টি হবে। সেজন্যই টেনশন মুক্ত হয়ে পরীক্ষা দেওয়াই ভালো এতে মনসংযোগ বাড়বে এবং সাফল্য তাড়াতাড়ি আসবে। কেবলমাত্র বোর্ড পরীক্ষায় নয় জীবনের যেকোনো বড় পরীক্ষায় এই টিপসগুলি মেনে চলুন। সাফল্য আপনার জীবনে দ্রুত আসবে।