Aditya L1 Update: ISRO ফের ইতিহাস গড়লো নতুন বছরে, সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছল আদিত্য L1
ISRO Aditya L1 Update : কথায় আছে ব্যর্থতাই হল সাফল্যের সিঁড়ি। কয়েকবার ব্যর্থতার পরে ISRO গত বছর চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করতে পেরেছে। তবে এখানেই থেমে নেই। নতুন বছর শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের পর্যবেক্ষণের জন্য যে পরিকল্পনা করেছিল সেটাও বাস্তবায়িত হয়েছে।
ইসরোর পক্ষ থেকে সূর্যের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা আদিত্য স্যাটেলাইট (Aditya L1) সূর্যের L1 পয়েন্ট-এর হ্যালো কক্ষপথে স্থাপিত হয়েছে। সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশ্যে এটিকে প্রেরণ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর নিজের যাত্রা শেষ করে এটি ৬ জানুয়ারি তারিখে L1 পয়েন্টে পৌঁছেছে।
বর্তমানে পৃথিবী থেকে ভারতের প্রথম সৌর মানমন্দিরের দূরত্ব হলো ১৫ লাখ কিলোমিটার। সূর্যের এই এল ওয়ান বিন্দুর চারপাশে হ্যালো কক্ষপথে এটি স্থাপন করা হয়েছে। কিছু সময়ের জন্য হ্যালো কক্ষপথে আদিত্য-এল ১ স্যাটেলাইট এর থ্রাস্টারগুলিকে রেখে চালু করা হয়েছিল। এতে থাকা সর্বমোট থ্রাস্টারের সংখ্যা ১২ টি।
আদিত্য-এল ১ স্যাটেলাইট এখন সৌর ঝড় থেকে ভারত সহ সমগ্র বিশ্বের উপগ্রহগুলিকে সুরক্ষা প্রদান করবে। এই মিশনটির পিছনে ইসরো ব্যয় করেছে মোট ৪০০ কোটি টাকা। বর্তমানে আদিত্য নিয়ে নাসার আরো চারটি উপগ্রহ দলে যোগ দিয়েছে। এই স্যাটেলাইটগুলির নাম হলো-WIND, Advanced Composition Explorer (ACE), Deep Space Climate Observatory (DSCOVER) এবং NASA-ESA-এর যৌথ মিশন SOHO অর্থাৎ সৌর ও হেলিওস্ফিয়ারিক অবজারভেটরি।
আরও পড়ুন: Google Pay: ১ লক্ষ টাকা পাবেন গুগল পে থেকে, পদ্ধতি জেনে নিন
ইসরোর সৌর পরিকল্পনা নিয়ে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছিল। তারা ভেবেছিল চন্দ্র পরিকল্পনার মত প্রথম দিকে যেমন ইসরো ব্যর্থ হয়েছিল তেমনি হয়তো এই পরিকল্পনাটাও ব্যর্থ হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের সকলের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে সৌরযাত্রাকে বাস্তবায়িত করে তুলল ইসরো, সঙ্গে নিজেদের হয়ে ভারতের নাম সমগ্র পৃথিবীর কাছে উজ্জ্বল করে তুলল।
এই আদিত্য-এল ১ (Aditya-L1) স্যাটেলাইট এর জার্নিটা সহজ ছিল না। একে সঠিক জায়গায় রাখা অনেক কঠিন একটি কাজ ছিল। এর জন্য গতি ও দিক নির্দেশের একটি সঠিক সমন্বয় প্রয়োজন হয়। তার জন্য মহাকাশযানের প্রকৃত অবস্থানটাও জানতে হয়। এর ডিটেলস জানার যে বিষয়টি এই প্রক্রিয়াটিকেই অরবিট ডিটার্মিনেশন বলে। ইসরোর এই ৪০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা দেশের ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করবে।
আদিত্য-এল ১ (Aditya-L1) মিশনের ডিরেক্টর নিগার সাজি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের বক্তব্য পেশ করার সময় জানিয়েছিলেন যে তাদের এই মিশন শুধুমাত্র সূর্যের উপর অধ্যয়নই করবে না বরং এটি সৌর ঝড়ের সমস্ত তথ্য সরবরাহ করবে। যার ফলে ভারতের ৫০ হাজার কোটি টাকার মূল্যের যে ৫০টি স্যাটেলাইট রয়েছে তার ওপর চাপ কম পড়বে। ফলে সেগুলো রক্ষা পাবে। এর সঙ্গে সঙ্গে যদি কোন দেশ এই ধরনের সাহায্য চাই তাহলে ভারত তাদের সাহায্যও করতে পারবে।
কীভাবে সম্ভব হলো আদিত্য-এল-১ (Aditya-L1) এর যাত্রা
আদিত্য-এল-১ (Aditya-L1) উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর। উৎক্ষেপণের পরে ১৬ দিন ধরে এটি পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছিল আর এই সময়ের মধ্যে সঠিক গতি পাওয়ার জন্য কক্ষপথ মোট পাঁচবার পরিবর্তন করা হয়েছিল। এরপরে সেটিকে ট্রান্স-ল্যারঞ্জিয়ান ১ কক্ষপথে পাঠানো হয়েছিল। এখান থেকে শুরু হয়েছিল আদিত্য-এল ১ (Aditya-L1)-এর দীর্ঘ ১০৯ দিনের যাত্রা। তারপরে এল ওয়ান কক্ষপথে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার কক্ষপথে এমন একটি কৌশল তৈরি করা হয়েছিল যাতে এটি এল ১ বিন্দুর চারপাশে হ্যালো কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।
আদিত্য-এল ১ (Aditya-L1)-এর সাফল্যের এই খবরটি শেয়ার করেছেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, “ভারত আরেকটি ল্যান্ডমার্ক তৈরি করেছে। ভারতের প্রথম সৌরমানমন্দির আদিত্য-এল ১ তার গন্তব্যে পৌঁছেছে।”