রাজ্যে নতুন শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ফের বড় দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু! কী জানালেন তিনি?
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক মামলা আদালতে এখনো আটকে রয়েছে। এর নিষ্পত্তি কবে হবে তা সকলের অগোচরের বাইরে। এরই মধ্যে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একটি বিশেষ বার্তা দিলেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তার মতে রাজ্যের এই একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি সমাজের শিক্ষকদের মাথা হেট করে দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবারের সরিষা হাই স্কুল মাঠে বক্তব্য দিতে গিয়ে এই কথা বলেন তিনি। ঐদিন ওই মাঠে তৃণমূল পন্থী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন হচ্ছিল। ওই দিনই তিনি সকলের সামনে এই কথা বলেন। একই সঙ্গে কিভাবে কোনরকম ঝামেলা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ করা যায় এই বিষয়েও তিনি সকলের সামনে তুলে ধরেন।
ঐদিন সম্মেলনে তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) উদ্দেশ্য করে কয়েকটি কথাও শোনান। তার মতে, “তিন চার বছর ধরে শিক্ষা দপ্তরই সবচেয়ে বেশি চর্চার মধ্যে রয়েছে। দু একজনের জন্য শিক্ষক সমাজের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। তাদের এই কীর্তি-কলাপের দায়িত্ব দল নিতে পারে না। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি যে সমাজে ভয়ংকর প্রভাব ফেলেছে। মানসিক অবমাননা যেমন হয়েছে তেমনি পক্ষপাতিত্ব নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা এবং সমালোচনা হয়েছে।”
বক্তব্যের মধ্যে তিনি নতুন নিয়োগ নিয়েও চাকরিপ্রার্থীদের আশ্বাস দেন। সমস্ত পরিস্থিতি সামলে নিয়ে সরকার কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই নতুন করে ১০ হাজার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আগামী দিনে কোন ঝামেলা ছাড়াই নিয়োগ করা হবে।
এর কিছুদিন আগেও নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে (Bratya Basu) একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছিল ওই সময় তিনি বলেছিলেন, “আমি যেটা বলতে পারি তা হল আমি মনে করি এসএসসি বা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইচ্ছাকৃত কোনও দুর্নীতি করেনি আর ভবিষ্যতে করবেও না। বিরোধীরা কেবল পিছনের কথা বলছেন। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চায়। আমি বলতে পারি নিয়োগে আর কোন প্রশ্ন উঠবে না। শিক্ষায় আর দুর্নীতি হবে না।”
এইবারের নিয়োগ সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় যে শিক্ষা মন্ত্রী সঠিকভাবে খতিয়ে দেখছেন তা তার কথায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তিনি চান শিক্ষার সঙ্গে শিক্ষকদের প্রভূত উন্নতি হোক। যেহেতু তিনি শিক্ষা মন্ত্রী হওয়ার পূর্বে শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ছিলেন এবং তার জন্য শিক্ষকদের প্রতি তার আলাদা একটা সম্মান ও সহানুভূতি রয়েছে। তিনি জানান যে যারা দুর্নীতি করে বেড়ায় তাদের ওপর দুর্নীতির দায় পড়বে তার জন্য সরকার কেনো দায়ী হবে?
ঐদিন সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি আগত সকল শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জানান যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজ ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর শিক্ষকদের একাধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছেন আর সামনে তার সেই ঋণ শোধ করার সময় এসেছে।
রাজ্যে তৃণমূলের যে ৪২ জন প্রার্থী রয়েছে তার মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষক তাদের নিজের এলাকায় গিয়ে মানুষদের সঠিক বুঝ দিয়ে আসবে। প্রকৃতপক্ষে ঐদিন সম্মেলনে শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে তিনি যে সামনে লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকেই জয়যুক্ত করতে চাইছেন তা তার কথায় স্পষ্ট বোঝা যায়।