কেউ IIT স্নাতক কারও আছে বিদেশি ডিগ্রি! তবুও বহু টাকা বেতনের চাকরি ছেড়েছেন যে সন্ন্যাসীরা
মোটা টাকা বেতন পেলে কম বেশি সকলেই বিলাসবহুল জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখেন। তবে এমন অনেকেই রয়েছে যারা টাকার বিছানায় শুয়েও নিজের জীবনকে ভিন্নভাবে সাজিয়ে তোলে। আজকে এই প্রতিবেদনে আমরা তাদের বিষয়ে আপনাদের জানাবো।
তাদের মধ্যে অন্যতম সন্ন্যাসী মহান মহারাজ (Mahan Mj)। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বর্তমানে যুব সম্প্রদায়কে উৎসাহিত করবে। তিনি কলকাতা থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাস করার পর কানপুর আইআইটিতে (Chhatrapati Shahu Ji Maharaj University) ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হন মহান মহারাজ (Mahan Mj)। পরবর্তীতে ওখানেই গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ১৯৯২ সালে তিনি তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেন।
এরপর ক্যালিফর্নিয়ার ইউনিভার্সিটিতে (University of California) অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
অনুপ্রেরণার আরেক নাম গৌরাঙ্গ দাস (Gauranga Das)। তিনি মুম্বাইয়ের আইআইটি থেকে স্নাতক স্তরের ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ১৯৯৩ সালে আইআইটি থেকে তিনি ধাতুবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। পাস করার পরপরই লক্ষ টাকা বেতনের চাকরির অফার আসে। কিন্তু সেই চাকরির অফার নাকচ করে তিনি বেছে নেন আধ্যাত্মিক জীবনকে।
আরও পড়ুন👉: উচ্চ মাধ্যমিক পাশে স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরির সুযোগ! বিস্তারিত জেনে নিন
বর্তমানে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন ছেড়ে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার রচিত একটি বই রয়েছে বইটির নাম হলো ‘দ্য আর্ট অফ ফোকাস’। বর্তমানে তিনি একাধিক স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি সংস্থা প্রেরণামূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
এই সারির অন্যতম একজন ব্যক্তিত্ব হলেন রসনাথ দাস (Rasanath Das) শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনি প্রথমে আইআইটি থেকে পাশ করেন। এরপর আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ পাস করেন। এরপরে তিনি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু কাজের ফাঁকে তিনি আধ্যাত্মিক চেতনার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে, কাজের ফাঁকে যখনই তিনি অবসর পেতেন ওই সময়ে তিনি ম্যানহাটনের একটি মঠে প্রতি দিন দু’ঘণ্টা ধরে ধ্যান করতেন।
আরও পড়ুন👉: লক্ষী ভান্ডার অতীত! এবার ৩,০০০ টাকা করে পাবেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে
এরপর ধীরে ধীরে তিনি আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝোঁক বাড়িয়ে ২০০৮ সালে চাকরি ছেড়ে পুরোপুরিভাবে মঠে চলে যান। এখন তিনি ওই মঠে সন্ন্যাস জীবন পার করছেন।
আধ্যাত্মিক পথে জীবন চালানোর আরেক নাম খুরশেদ বাটলিওয়ালা। তিনি মুম্বইয়ের আইআইটি থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। এর পরপরই তিনি নিজেকে সমস্ত কিছু থেকে সরিয়ে পুরোপুরি আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশ করেন।
তার মতে অর্থ ও বিলাসিতা ছাড়া খুব সাধারণভাবে জীবন যাপন করা যায় এবং এটি অসাধারণ জীবন। এর উপরে তিনি একাধিক জায়গায় বক্তৃতা ও দিয়ে থাকেন তার রচিত একাধিক বই রয়েছে।
স্বামী মুকুদানন্দ (Swami Mukundananda) যিনি পড়াশোনা করেছেন দিল্লির আইআইটি থেকে। সেখানে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পাশ করার পর তিনি কলকাতার আইআইএম থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। যোগবিদ্যা এবং আধ্যাত্মিকতা বিষয়ে তিনি একাধিক বই লিখেছেন। একজন আধ্যাত্মিক গুরু হিসাবে এখন তিনি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন।
অভিরাল জৈন (Aviral Jain) যিনি পড়াশোনা করেছেন বারাণসীর আইআইটি থেকে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। উনার পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরপরই বছরে ৪০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জীবনের ভোগ বিলাসিতা ছেড়ে আধ্যাত্মিকতাকাকে বেছে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন👉: SSC Eligible Candidates : ২০১৬-র যোগ্য প্রার্থীদের কী হবে? তারা কী আর চাকরি পাবে? রইল উত্তর
সঙ্কেত পারেখ (Sanket Parekh) যিনি পড়াশোনা করেছেন মুম্বইয়ের আইআইটি। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ডিগ্রী পাস করার পর তিনি আমেরিকায় চাকরিও পেয়েছিলেন। চাকরির বেতন অনুসারে তাকে প্রতি বছর ১২ লক্ষ টাকা করে আয় কর দেওয়া লাগতো। মোটা টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে তিনি আধ্যাত্মিকতার জীবন বেছে নিয়েছেন। পড়াশোনা চলাকালীন জৈন ধর্ম বিষয় তিনি পড়াশোনা করতেন এরপরে তিনি আড়াই বছর পর সবকিছু ছেড়ে ২০১৩ সালে পুরোপুরি ভাবে আধ্যাত্মিকতার জীবনে প্রবেশ করেন।
আচার্য প্রশান্ত (Acharya Prashant) যিনি পড়াশোনা করেছেন দিল্লির আইআইটি থেকে। সেখান থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক পাস করার পর ২০০৩ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আমদাবাদের আইআইএম থেকে। পড়াশোনা শেষ করার পর উচ্চ বেতনের চাকরিও পেয়ে যান। কিন্তু এসব কিছু ছেড়ে বেদ-উপনিষদ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি আর পুরোপুরিভাবে আধ্যাত্মিকতায় প্রবেশ করেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার। তার রচিত একাধিক বই রয়েছে।
রাধেশ্যাম দাস (Radheshyam Das) যিনি মুম্বইয়ের আইআইটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৯৩ সালে। এপারে মোটা টাকা বেতনের চাকরিও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু আধ্যাত্মিকতায় তিনি এতটা মজেছিলেন যে এই সবকিছু ছেড়ে ১৯৯৭ সালে ইসকনের সঙ্গে পুরোপুরিভাবে যুক্ত হয়ে যান।
আরও পড়ুন👉: West Bengal SSC Recruitment Verdict: ১২% সুদ হিসেবে SSC-তে ভুয়ো চাকরি প্রাপকদের ঠিক কত টাকা ফেরাতে হবে?