ট্রেনের টিকিটের বুকিং স্ট্যাটাস দেখতে চান? বড় পদক্ষেপ নিলো পূর্ব রেল! জানুন বিস্তারিত
ট্রেনে যাত্রা করার জন্য মানুষদের টিকিট বুকিং করে তার মধ্যে থাকা একাধিক তথ্য এর বিস্তারিত অনেকেই জানে না। সেই কথা মাথায় রেখে আজ আমরা এই প্রতিবেদনে পূর্ব রেলওয়ের টিকিট বুকিং প্রক্রিয়ায় স্পষ্টতা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
আপনি যখন রিজার্ভেশন-এর একটি টিকিট করেন তখন সেই টিকিটের বর্তমান অবস্থাকে বলা হয় বুকিং স্ট্যাটাস। নিম্নে আরো একাধিক ব্যাপারে কোডিং তথ্যের ব্যাপারে আলোচনা করা হলো-
PNR (প্যাসেঞ্জার নেম রেকর্ড)
যখন কোন যাত্রী অনলাইনে অথবা অফলাইনে ট্রেনের টিকিট করে ওই সময়ে ১০-অঙ্কের সনাক্তকরণের জন্য যে নম্বর তৈরি করা হয় তাকে বলে PNR প্যাসেঞ্জার নেম রেকর্ড। এই পিএনআর নম্বর প্রতিটি যাত্রীর ট্রেন যাত্রার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নম্বর। এরমধ্যে যাত্রীর নাম, লিঙ্গ, বয়স, পৌঁছানোর সময় ও ট্রেনে ওঠার সময়, উৎস স্টেশন এবং গন্তব্য স্টেশন, আসন সংরক্ষিত (যদি থাকে), বুকিংয়ের প্রাথমিক অবস্থা, বর্তমান অবস্থা, ট্রেনের নাম ও নম্বর সহ একাদিক তথ্য এখানে দেওয়া থাকে।
টিকিটিং প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন পি এন আর কোড যথাযথভাবে বুঝতে পারা যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিম্নোক্ত কোডগুলি ট্রেনের টিকিটিং প্রক্রিয়ায় সাধারণত দেখা যায়। পূর্ব রেলওয়ে এই কোডগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করতে পেরে আনন্দিত।
GNWL (সাধারণ ওয়েটিং লিস্ট)
এই তালিকার মধ্যে যে টিকিটগুলি থাকে সেগুলি ওয়েটিং লিস্টে থাকে। আর এই টিকিটগুলি তখনই কনফার্ম হয় যখন অন্য কোন যাত্রীরা নিজেদের টিকিট বুকিং ক্যানসেল করে। টিকিটের নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা GNWL-এর ক্ষেত্রে বেশি থাকে। আর ট্রেনের টিকিটের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত ওয়েটিং লিস্ট গুলির মধ্যে যেগুলি থাকে তার মধ্যে GNWL অন্যতম।
RSWL (ট্রেন যাত্রার মধ্যবর্তী স্টেশন থেকে কাটা টিকিটের তালিকা)
মধ্যবর্তী স্টেশন গুলি থেকে যদি টিকিট কাটা হয় অর্থাৎ ট্রেনের যাত্রাপথের মাঝের কোনো স্টেশন থেকে যেসব টিকিটগুলি বুকিং করা হয় সেই আসনগুলি যাত্রার প্রথম থেকে পূরণ না হওয়ার কারণে RSWL অপেক্ষমান তালিকায় সেগুলি দেওয়া হয়। এ তালিকায় যে টিকিটগুলি থাকে তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
CKWL/TKWL (তত্কাল কোটার মধ্যে থাকা টিকিটের অপেক্ষমান তালিকা)
তত্কাল কোটার সুযোগ নিয়ে যে টিকিটগুলি কাটা হয় তার মধ্যে সি কে ডব্লিউ এল (CKWL) হল অপেক্ষমান তালিকা। আর রিজার্ভেশন সিস্টেমে তত্কাল কোটা বোঝানোর জন্য কোড হিসেবে সিকে (CK) ব্যবহার করা হয়। ট্রেন যেদিন ছাড়ে তার একদিন আগে এই সুযোগ ব্যবহার করা যায়।
PQWL (পুলড কোটার মধ্যে থাকা টিকিটের অপেক্ষমান তালিকা)
টিকিটের অপেক্ষমান তালিকা একাধিক স্টেশন অনুযায়ী ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন যেসব টিকিট গুলো ট্রেনের যাত্রা শুরু স্টেশন থেকে করা হয় অথবা শেষ স্টেশনের আগের কোন স্টেশনে বা দুই স্টেশনের মধ্যে।
RQWL (অনুরোধের অপেক্ষমান টিকিটের তালিকা)
যদি একটি ট্রেনের দুটি মধ্যবর্তী স্টেশন থেকে যাত্রা করা হয় এবং তার জন্য যে টিকিট বুক করে সে টিকিটগুলি সাধারণ অথবা পুলড কোটার মধ্যে দেবো না হলে RQWL-এর অপেক্ষমান তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এক্ষেত্রে আর এসি টিকিট নিয়ে যাত্রী ভ্রমণ করতে পারলেও আসন পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে না। যদি কোন যাত্রীর কাছে আর এ সি টিকিট থাকে তাহলে তাকে অপর কোন আর এ সি টিকিট যাত্রীর সঙ্গে আসন ভাগ করে যাত্রা করতে হবে।
RLWL (দূরবর্তী অবস্থানের অপেক্ষমান তালিকা)
একটা ট্রেন যেখান থেকে যাত্রা শুরু করে তার যাত্রার মধ্যে যদি বিখ্যাত কোন শহর পড়ে তাহলে সেই মধ্যবর্তী স্টেশন গুলিতে আসন বুকিং এর জন্য RLWL অপেক্ষমান তালিকা দেওয়া হয়। এই তালিকায় থাকার টিকিট গুলি তখনি কনফার্ম হয় যদি অন্য কোন যাত্রীরা নিজেদের টিকিট বাতিল করে। তালিকাভুক্ত টিকিটগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
CNF (নিশ্চিতকরণ টিকিটের তালিকা)
যখন কোন যাত্রী রিজার্ভেশন টিকিট বুক করেন তখন তার টিকিটের অবস্থা “সি এন এফ” হিসাবে দেখানো হতে পারে। আর যদি সে যাত্রীর টিকিট নিশ্চিত হয় তাহলে সি এন এফ অবস্থা দেখার পাশাপাশি এটার মাধ্যমে তাঁদের ট্রেনের কোচ এবং আসন নম্বরও দেখতে পারবেন।
যাত্রী সাধারণের সুবিধার জন্য পূর্ব রেলের তরফ থেকে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাত্রীরা যাতে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ট্রেনে নিরাপদ ভাবে যাতায়াত করতে পারে তার জন্য ১৩৯ নম্বরটি চালু করা হয়েছে। এই নম্বরের মাধ্যমে পি এন আর স্ট্যাটাস বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসা এসএমএস সুবিধা যাত্রীরা যাতে পরীক্ষা করে তার জন্য বলা হয়েছে। কোন যাত্রী তার রিজার্ভেশন টিকিট পরীক্ষা করতে চাইলে এই নম্বরের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে পারবে এবং তার টিকিটের সমস্ত অবস্থা সে দেখতে পারবে। সে টিকিটের মধ্যে যদি তারা কোন গন্ডগোল দেখতে পায় তাহলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।